
একজন সন্তানের জন্ম শুধু একটি নতুন জীবনের সূচনা নয়, বরং তা একটি পরিবারের আনন্দ, ভালোবাসা ও দায়িত্বের সূচনাও বটে। নবজাতক কন্যা শিশুর জন্য একটি সুন্দর, অর্থবহ ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য নাম নির্বাচন করা প্রতিটি মুসলিম পরিবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এই প্রেক্ষাপটে কোরআন থেকে মেয়েদের নাম বেছে নেওয়া শুধু একটি নাম নির্বাচন নয়, বরং তা একটি মূল্যবোধ, বিশ্বাস ও আল্লাহর প্রতি আস্থা প্রকাশের মাধ্যম হয়ে ওঠে।
কোরআনের অনেক নাম ও শব্দ মেয়েদের নাম হিসেবে ব্যবহার হয়, যেগুলোর রয়েছে গভীর অর্থ ও আধ্যাত্মিক সৌন্দর্য। যেমন— মারইয়াম (হযরত ঈসা আঃ-র মাতা), যার অর্থ ‘শুদ্ধ ও নিষ্পাপ’; সাকিনা যার অর্থ ‘আত্মিক প্রশান্তি’; নুর অর্থাৎ ‘আলো’; জান্নাত অর্থ ‘স্বর্গ’; রাহমা অর্থ ‘দয়া’—এই নামগুলো শুধু মধুর শোনায় না, বরং এগুলোর রয়েছে শক্তিশালী ইসলামী তাৎপর্য।
এই ধরনের নাম শিশুর ব্যক্তিত্ব গঠনে ভূমিকা রাখে, কারণ নাম শুনেই অনেক সময় মানুষ সেই শিশুর পারিবারিক মূল্যবোধ এবং ধর্মীয় অনুশাসনের ইঙ্গিত পায়। পাশাপাশি, কোরআনি নাম সাধারণত আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হওয়ায়, ভবিষ্যতে একজন শিশুর নাম নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে না।
নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোরআন শরীফে যে শব্দ বা শব্দগুচ্ছ মহান আল্লাহ প্রশংসিত করেছেন, সেগুলো খেয়াল করে রাখা উচিত। কিছু নাম সরাসরি কোনো নবী বা সাহাবীর স্ত্রী বা নারীদের উল্লেখ করে আছে, আবার কিছু নাম গুণবাচক অর্থ প্রকাশ করে, যা কন্যা শিশুর জীবনে আশীর্বাদস্বরূপ হতে পারে।
যেহেতু কোরআনের নামগুলো পবিত্র উৎস থেকে আগত, তাই তা ইসলামের বিধান অনুযায়ী নিঃসন্দেহে গ্রহণযোগ্য। তবে নাম রাখার আগে তার সঠিক উচ্চারণ, অর্থ ও কোরআনের কোন সূরায় তা এসেছে—সেগুলো যাচাই করে নেওয়া ভালো।
একটি নাম শুধুমাত্র ডাকে ব্যবহার করার জন্য নয়, বরং তা যেন হয়ে ওঠে জীবনের পরিচয়, পথনির্দেশ এবং দোয়া—এই বিশ্বাস নিয়েই আমাদের উচিত কোরআন থেকে মেয়েদের নাম বেছে নেওয়া, যেন সেই নাম আল্লাহর সন্তুষ্টির বাহক হয় এবং শিশুর জীবনজুড়ে ভালোত্বের প্রতীক হয়ে থাকে।