
বর্তমান আর্থিক ব্যবস্থায় ক্রেডিট কার্ড এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এটি কেবল একটি লেনদেনের উপকরণ নয়, বরং অর্থ ব্যবস্থাপনায় স্বাধীনতা, জরুরি পরিস্থিতিতে সহায়তা এবং নানা ধরনের অফার ও ছাড় পাওয়ার মাধ্যমও বটে। তবে অনেকে জানেন না, ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা নির্ধারিত কিছু মানদণ্ডের উপর নির্ভর করে, যা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিবেচনায় নেয়।
প্রথমেই যে বিষয়টি দেখা হয় তা হলো আবেদনকারীর বয়স। সাধারণত ১৮ থেকে ২১ বছর বয়সের মধ্যে কেউ নিজস্ব আয় থাকলে এবং অন্যান্য শর্ত পূরণ করলে কার্ড পেতে পারেন। তবে অধিকাংশ ব্যাংক ২১ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ড অফার করে থাকে।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো আয় বা ইনকাম সোর্স। আপনি যদি চাকুরিজীবী হন, তাহলে মাসিক বেতন কত, সেটি নির্ধারণ করে আপনি কোন ধরনের ক্রেডিট কার্ড পাবেন। সাধারণত ন্যূনতম ১৫,০০০ টাকা মাসিক আয় হলে অনেক ব্যাংক প্রাথমিক ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। ব্যবসায়ীদের জন্য বার্ষিক আয় বিবেচনা করা হয়।
ক্রেডিট স্কোর বা আর্থিক সুনাম একটি বড় ভূমিকা রাখে। আপনি পূর্বে কোনো ঋণ নিয়েছেন কি না, তা সময়মতো পরিশোধ করেছেন কি না—এসব বিষয় ক্রেডিট হিস্টোরিতে অন্তর্ভুক্ত থাকে। ভালো ক্রেডিট স্কোর থাকলে ব্যাংকের আস্থা বাড়ে এবং আপনি সহজেই কার্ড পেতে পারেন।
এছাড়া কিছু প্রতিষ্ঠান নমিনেশন বা গ্যারান্টার চায়, বিশেষ করে যাদের পূর্বে কোনো ব্যাংক হিসাব বা লোন রেকর্ড নেই। ব্যাংকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ এফডিআর আকারে জমা রেখে অনেক সময় সিকিউরড ক্রেডিট কার্ডও পাওয়া যায়।
সবশেষে, একটি বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি, আয়প্রমাণ (বেতন স্লিপ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট), ঠিকানার প্রমাণপত্র জমা দিতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে ই-টিন সার্টিফিকেট বা পাসপোর্টও প্রয়োজন হয়।
সুতরাং, যারা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে চান, তাদের উচিত আগে থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা এবং নিজের আর্থিক সচেতনতা বজায় রাখা। সঠিক যোগ্যতা পূরণ করলে আপনি সহজেই ক্রেডিট কার্ড পেতে পারেন এবং শুরু করতে পারেন এক নতুন অর্থনৈতিক অভিজ্ঞতা—স্মার্ট ও স্বাধীন জীবনের পথে।