ইসলাম ধর্মে জান্নাত বা স্বর্গের বর্ণনা অত্যন্ত বিস্তারিত এবং মনোমুগ্ধকরভাবে করা হয়েছে। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে জান্নাতের বিভিন্ন উপাদানের পাশাপাশি হুরদের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। হুর শব্দটি সাধারণত ঐশ্বরিক সৌন্দর্যের অধিকারী নারীদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, যাদের জান্নাতে মুমিনদের জন্য পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হবে। জান্নাতের হুরদের নাম কুরআন ও হাদিসে সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, তবে তাদের বৈশিষ্ট্য, রূপ এবং তাদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ দান সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়।
হুরদের ব্যাপারে বলা হয়েছে যে তারা অত্যন্ত সুন্দর, পবিত্র এবং চিরতরে যুবতী থাকবেন। তাদের সৌন্দর্যের তুলনা করা হয়েছে নিখুঁত মুক্তোর সঙ্গে। আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতের মুমিন পুরুষদের জন্য সৃষ্ট করেছেন, যারা জীবনে আল্লাহর নির্দেশ অনুসরণ করে চলেছেন। হুরদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তাদের নিষ্পাপতা এবং তাদের প্রতি আল্লাহর অসীম দয়া। তাদের হৃদয় হবে বিশুদ্ধ এবং তারা কোনো পাপের সঙ্গে যুক্ত থাকবে না।
পবিত্র কুরআনে একাধিক স্থানে হুরদের উল্লেখ পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, সূরা আ-দুখান, আ-রাহমান, এবং সূরা আল-ওয়াকিয়াতে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। তারা জান্নাতের সুশোভিত বাগানে থাকবে এবং মুমিনদের সঙ্গ দেবে। হাদিসেও উল্লেখ রয়েছে যে, হুরদের চোখ হবে বড় এবং শ্বেতবর্ণ, যা তাদের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে। তাদের নামের পরিবর্তে তাদের বৈশিষ্ট্য এবং তাদের অসাধারণ সৌন্দর্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
তবে ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে জান্নাতের মূল পুরস্কার হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা এবং তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাওয়া। হুরদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জান্নাতের পরিবেশকে আরও আনন্দময় এবং সুখী করা, যেখানে মুমিনরা অনন্তকাল সুখে থাকবে।
তাই, জান্নাতের হুরদের নাম সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও তাদের বৈশিষ্ট্য এবং তাদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ কৃপা সম্পর্কে কুরআন ও হাদিস থেকে বিস্তারিতভাবে জানা যায়। এটি জান্নাতের অন্যান্য বর্ণনার মতোই মুসলমানদের অনুপ্রাণিত করে এবং আল্লাহর আদেশ অনুসরণ করে জান্নাতের পথে চলার উৎসাহ যোগায়।