
ওয়ারিশ সনদ একটি সরকারি নথি, যা প্রমাণ করে কে বা কারা কোনো মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির আইনগত উত্তরাধিকারী। বাংলাদেশে সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা, জমি নামজারি, ব্যাংকের টাকা উত্তোলন, বা আদালতের কোনো মামলায় উত্তরাধিকারের প্রমাণ হিসেবে ওয়ারিশ সনদ আবশ্যক হয়ে পড়ে। এটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান যেমন ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন থেকে সংগ্রহ করতে হয়।
সাধারণত, কেউ মারা গেলে তার মৃত্যুর পরবর্তী উত্তরাধিকারীরা এই সনদের জন্য আবেদন করেন। আবেদন করার জন্য প্রয়োজন হয় মৃত ব্যক্তির নাম, মৃত্যুর তারিখ, এবং পরিবারের সদস্যদের বিস্তারিত তথ্য। ওয়ারিশ সনদে মৃত ব্যক্তির সকল জীবিত উত্তরাধিকারীর নাম, বয়স, এবং সম্পর্ক উল্লেখ থাকে। এ নথিটি ভবিষ্যতে সম্পত্তি নিয়ে কোনো বিরোধ এড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
আবেদন করার প্রক্রিয়া খুব জটিল না হলেও কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। যেমন—সকল উত্তরাধিকারীর তথ্য সঠিকভাবে দিতে হবে, ভুল তথ্য দিলে পরে সমস্যা হতে পারে। আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, মৃত ব্যক্তির মৃত্যু সনদ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়। অনেকে আবেদনের সময় ভুল করে পরিবারের কোনো সদস্যকে বাদ দিয়ে দেন, যা ভবিষ্যতে আইনি জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।
বর্তমানে অনেক পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ ডিজিটাল সিস্টেমে আবেদন গ্রহণ করছে, যেখানে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে ফর্ম পূরণ করে ওয়ারিশ সনদের জন্য আবেদন করা যায়। এতে করে আবেদন প্রক্রিয়া সহজ ও সময় সাশ্রয়ী হয়।
ওয়ারিশ সনদ শুধু সম্পত্তির ভাগ নয়, বরং একজন নাগরিকের মৃত্যুর পর তার পরিবারের আইনি অধিকার রক্ষার অন্যতম দলিল। এটি ছাড়া জমির খতিয়ান হালনাগাদ, ব্যাংকের হিসাব হস্তান্তর, অথবা সরকারি অনেক কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না।
সঠিক তথ্য দিয়ে, নির্ভুলভাবে আবেদন করলে ওয়ারিশ সনদ পাওয়া সহজ হয় এবং ভবিষ্যতের জটিলতাও এড়িয়ে যাওয়া যায়। তাই মৃত্যুর পর পরিবারের স্বার্থ সুরক্ষায় এটি সংগ্রহ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।