
এশার নামাজ ১৭ রাকাত মুসলমানদের জন্য রাতে আদায়যোগ্য গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি দিনের শেষ নামাজ, যা আত্মিক প্রশান্তি, আল্লাহর নৈকট্য, এবং পাপ মোচনের সুযোগ এনে দেয়। এশার নামাজের প্রতিটি রাকাত আল্লাহর প্রতি আমাদের আনুগত্য এবং ভক্তির প্রকাশ। এই নামাজ সঠিকভাবে এবং নিয়মিত আদায় করলে একজন মুসলিম তার দৈনন্দিন জীবনে শান্তি ও বরকত লাভ করেন।
এশার নামাজের ১৭ রাকাত মূলত চারটি ভিন্ন ভাগে বিভক্ত। প্রথমে ৪ রাকাত সুন্নত মুআক্কাদাহ নামাজ পড়া হয়, যা নবী মুহাম্মদ (সা.) নিয়মিত আদায় করতেন। এটি সুন্নতে মুআক্কাদাহ হিসেবে গণ্য হয় এবং অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এরপর ৪ রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করা হয়, যা মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক। এটি আল্লাহর আদেশ পালন এবং আত্মসমর্পণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
ফরজ নামাজের পর ২ রাকাত সুন্নত গাইর মুআক্কাদাহ আদায় করা হয়। যদিও এটি বাধ্যতামূলক নয়, তবে যারা এটি নিয়মিত পড়েন, তারা আল্লাহর বিশেষ রহমত এবং সাওয়াব অর্জন করতে পারেন। এরপর ৩ রাকাত বিতর নামাজ আদায় করা হয়, যা এশার নামাজের অপরিহার্য অংশ। বিতর নামাজে শেষ রাকাতে কুনুতের দোয়া পড়তে হয়। এটি আত্মসমর্পণ এবং পরকালীন মুক্তির প্রার্থনা হিসেবে গণ্য হয়। যারা অতিরিক্ত ইবাদতে অংশ নিতে চান, তারা ৪ রাকাত নফল নামাজ পড়তে পারেন, যা ঐচ্ছিক হলেও অত্যন্ত পুণ্যময়।
এশার নামাজের ফজিলত অসীম। নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি এশার নামাজ পড়ে, সে যেন সারা রাত ইবাদত করল।” এটি শুধু দৈহিক ইবাদত নয়, বরং আত্মিক উন্নতির জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নামাজের প্রতিটি রাকাত আল্লাহর প্রতি ভক্তি প্রকাশ এবং দুনিয়ার মোহ থেকে মুক্তি লাভের একটি মাধ্যম।
এশার নামাজ পড়ার জন্য মনোযোগ এবং সঠিক নিয়ম মানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি রাকাতে আল্লাহর প্রশংসা এবং কুরআনের আয়াত তেলাওয়াত করা হয়। নামাজে মনোযোগ ধরে রাখার জন্য নিয়মিতভাবে আয়াতের অর্থ বোঝার চেষ্টা করা উচিত।